Food Zone Vegetable

রসালো টমেটো

একে ফল না সবজি বলবো? সেই প্রশ্নে আপাতত না যাই। আগে এর আদি বাড়ি, বংশ-বিস্তার, প্রকৃতি এসব জেনে নেই। বলছি রসালো ফল টমেটোর কথা। নাইটশেড পরিবারের  এই সদস্যের আদি বাড়ি দক্ষিণ আমেরিকায়। এটি আবার সোলানেসি পরিবারের লাইকোপার্সিকনের অন্তর্ভুক্ত। উদ্ভিদগতভাবে যদিও এটি ফল, তবে সাধারণত একে সবজির মতো খাওয়া এবং রান্না করা হয়। যেহেতু রান্না করতে হয় এমন খাবার তৈরিতে এটি বেশি ব্যবহৃত হয় তাই সবজি হিসেবেই বিবেচনা করা ভালো। ভারতে হেঁসেলে এসেছিলো পর্তুগিজদের হাত ধরে। এরপর ভারতসহ বাঙালির পাতে নানানভাবে, আঙ্গিকে পরিবেশিত হয়েছে। বিশেষ করে শীতের রঙিন সব সবজির সাথে লাল টমেটো যুগলবন্ধী হয়ে স্বাদে ও  ‍দৃষ্টিনন্দন ডিশ তৈরিতে অনবদ্য একটি উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যেকোনো খাবারের ডিশ নান্দনিকভাবে উপস্থাপনের জন্য টমেটোর অসাধারণ ব্যবহার হরহামেশাই দেখা যায়।

বাংলায় একে  ’বিলিতি বেগুন’ নামেও ডাকা হয়। আসলে আঠারো শতকের পর থেকে এটি শুধু ব্রিটিশদের জন্য চাষ করা হতো তাই এমন নামকরণ। এই সবজি বা ফলটি বেশ ভালোভাবেই গৃহীত হয়েছিলো কেননা এদেশের আলো-হাওয়া এটি চাষের জন্য যথার্ত।
পথ্যবিচারে টমেটো হ’ল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট লাইকোপিনের প্রধান উৎস, যার হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাসসহ অনেক হেল্থ বেনিফিট রয়েছে। আর এই লাইকোপিনের জন্যই টমেটো টুকটুকে লাল হয়। এটি আবার ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ফোলেট এবং ভিটামিন কে‘র চমৎকার উৎস। সাধারণত পাকলে এটি টকটকে লাল রঙ ধারণ করে। তবে হলুদ, কমলা, সবুজ এমনকি বেগুনি রঙের টমেটোও রয়েছে। নানান আকৃতি ও ফ্লেভারের বেশ কয়েক প্রজাতির টমেটো জন্মায়। সুন্দর এই ফলটির ৯৫ ভাগই জল, বাকীটা কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবারে পূর্ণ ।

এতে রয়েছে প্রচুর বিটা ক্যারোটিন। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টটির জন্যই টমেটো হলুদ বা কমলা রঙের হয়। বিটা ক্যারোটিন আমাদের শরীরে ভিটামিন এ- তে রূপান্তরিত হয়। এই ভিটামিন স্বাস্থ্যকর দৃষ্টি এবং টিস্যু রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয়। এই ক্যারোটিনয়েডগুলি কেবলমাত্র ভিটামিন এ- তে রূপান্তরিত হয় না বরং এটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবেও কাজ করে, যা আমাদের কোষগুলিকে ফ্রি র‌্যাডিকাল নামক অস্থির অণু দ্বারা সৃষ্ট ক্ষয় থেকে রক্ষা করে।

টমেটোর রস একটি জনপ্রিয় পানীয় যা বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন, খনিজ এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে। টমেটোর রস গাজর কিংবা বিটের রসের সাথে মিলিয়ে নিলেও বেশ সুস্বাদু পানীয় তৈরি হতে পারে। মাত্র এক কাপ টমেটো জুস প্রতিদিনের ভিটামিন সি- এর চাহিদা পূরণ করতে পারে। শারীরিক পরিশ্রমের পর ক্লান্তি দূর করতে টমেটোর রস যেকোনো কোমল পানীয়ের চেয়ে বেশি উপকারী। গবেষকরা বলেন, ব্যায়াম বা অন্য যেকোনো শারীরিক পরিশ্রমের পর টমেটোর রস পেশি পুনরুদ্ধারে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

নারিনজেনিন। এটি টমেটোর ত্বকে পাওয়া যায়, এই ফ্ল্যাভোনয়েড জ্বলুনি কমাতে বেশ কার্যকর। টমেটোর রস ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়াম দিয়ে পূর্ণ যা হৃদ-স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দুটি খনিজ। টমেটোতে রয়েছে ভিটামিন এ যা দৃষ্টিশক্তিকে আরও উন্নত করে। টমেটোতে বিদ্যমান ভিটামিন-কে মজবুত হাড় গঠনে সহায়তা করে।

ধূমপান ছাড়তে সহায়কতো করেই ধূমপানের কারণে শরীরে সৃষ্ট ক্ষতি পুষিয়ে নিতেও কার্যকরী এ সবজি। চুল ও দাঁতের জন্য উপকারী এ সবজি। ত্বকের স্বাস্থ্যর রক্ষায়  বিশেষ ভূমিকা রাখে ।  ন্যাচারাল এ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে  ইনফেকশন রোধে ব্যবহার করা হয়।

কোলেস্টেরলের মাত্রা ও রক্তচাপ কমাতে সহায়ক করে বলে নিয়মিত টমেটো খেলে, হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমে যায়। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে, তাই ডায়াবেটিসের জন্য টমেটো বেশ উপকারী। 

Avatar

admin57

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like

Food Zone

Smarter Food Choices 101 Tips For The Busy Women

Grursus mal suada faci lisis Lorem ipsum dolarorit ametion consectetur elit. a Vesti at bulum nec odio aea the dumm
Food Zone

Barbecue Party Tips For As Truly Amazing Event

Grursus mal suada faci lisis Lorem ipsum dolarorit ametion consectetur elit. a Vesti at bulum nec odio aea the dumm